সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৯ অপরাহ্ন
মোঃ কামরুল হাসান লিটন: ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু (শম্ভুগঞ্জ সেতু) পার হয়ে যানবাহন যাওয়া-আসা করছে। কিন্তু নেই টোল আদায় করার কোনো কর্মচারী। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এখানে অবস্থান নিয়েছেন। টোল না দিয়ে শৃঙ্খলার সঙ্গে গাড়ি চলাচল করার জন্য দায়িত্ব পালন করছেন তারা। এতে খুশি গাড়ি নিয়ে যাওয়া চালকরা।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে নগরীর চায়নামোড় এলাকায় টোলবক্সের পাশে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়। টোল আদায় বন্ধের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে সেই দাবি বাস্তবে রুপ নিয়েছে। টোল আদায় বন্ধ হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রাসহ এই সড়কে চলাচল করা বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা।
এ সময় কথা হয় জহির উদ্দিন, জালাল মিয়া, মনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন অটোরিকশা চালকের সঙ্গে। তারা জানান, বছরের পর বছর ধরে টোল দিয়ে দিয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। যতবার সেতু পার হতে হয় ততোবারই ১০ টাকা টোল দিতে হয়। টোল আদায় বন্ধ করা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। অবশেষে সেই দাবি বাস্তবায়ন হওয়ায় আমরা খুশি।
এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত গাড়ি নিয়ে চলাচল করেন বাসচালক মঙ্গল মিয়া ও ট্রাকচালক জওহর লাল। তারা জানান, অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে টাকা দিয়ে চলাচল করেছে ছোট-বড় সব ধরনের যানবাহন। এখন শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়ায় টোল আদায় বন্ধ রয়েছে। তবে যেকোনো মুহুর্তে আবার চালু হবে বলে মনে হচ্ছে। স্থায়ীভাবে টোল আদায় বন্ধ করা প্রয়োজন।
সাকিব, আরাফাতসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেছে। আমরা চাই, নতুন করে স্বাধীন হওয়া দেশে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ভালো থাকুক। তাই স্থায়ীভাবে টোল আদায় বন্ধ করতে শিক্ষার্থীরা চেষ্টা চালাচ্ছে।’
স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি চালু হয় ১৯৯১ সালে। সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন শেরপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের মানুষ চলাচল করে। সেতুর টোল হিসেবে প্রতিবার পারাপারের সময় বিভিন্ন ধরনের ট্রাক, বাস, প্রাইভেটকারসহ নানা প্রকারের যানবাহন থেকে আদায় করা হয় ২০ থেকে ২৫০ টাকা। এ ছাড়া সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে ১০ টাকা করে টোল আদায় করা হয়। বর্তমানে মোটরসাইকেল থেকে কোনো টোল আদায় করা হয় না। তিন বছর পরপর সেতুটি ইজারা দেওয়া হচ্ছিল।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম সাদ্দাম হোসেন বলেন, সর্বশেষ সেতুটি তিন বছরের জন্য প্রায় ৫৬ কোটি ইজারা দেওয়া হয়েছিল। এই সেতু নির্মাণে ৩৩ বছরে ২১৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সেতুটির টোল আদায় সাময়িকভাবে বন্ধ করেছি। স্থায়ী ব্যবস্থার প্রক্রিয়া চলছে।